চেক মামলা থেকে বাচার উপায়

আমরা সকলেই আর্থিক লেনদেন করার জন্য চেক ব্যবহার করতে পছন্দ করি। এটি হলো সবচেয়ে ঝুঁকিবিহীন এবং সহজ একটি পদ্ধতি। চেকের মাধ্যমে লেনদেন করতে গিয়ে আমরা অনেক সময় প্রতারিত হই। অনেক সময় চেক ডিজঅনার মামলায় জড়িয়ে যাই। মামলা হলে অনেকেই জানিনা “চেক ডিজঅনার মামলা” থেকে বাচার উপায়। চলুন জেনে নেই, আপনার বিরুদ্ধে চেকের মামলা হলে চেক মামলা থেকে বাচার উপায় ।

চেক ডিজঅনার বা চেকের মামলা কি?

রহিম নামে এক ব্যক্তির টাকার প্রয়োজনে করিম নামে একজন থেকে টাকা ধার নিয়েছেন। যখন করিম টাকা ধার দেয় তখন করিম কে রহিম একটি চেক দেয়। সময়মত করিম চেকটি নিয়ে ব্যাংকে টাকা আনতে গেলে অফিসার করিমকে বলল, একাউন্টে টাকা নাই।

করিম ব্যাংক থেক একটি লিখিত মেমোসহ চেকটি ফেরত নিয়ে আসে। মেমোতে লেখা আছে, টাকার পরিমাণ কম। এই ফেরত আসা বা ব্যাংক থেকে চেকটি ফেরত দেওয়াকে বলা হয় চেক ডিজঅনার।

অতঃপর যখন করিম টাকা আদায়ের জন্য রহিমের বিরুদ্ধে চেকটি নিয়ে আদালতে আইন অনুযায়ী মামলা করে সেটাকে বলে চেকের মামলা বা চেক ডিজঅনার মামলা।

আরো জানুনঃ

মুসলিম ফারায়েজ ক্যালকুলেটর।

চেক ডিজঅনারের পূর্ব শর্ত

নিম্মে চেক ডিজঅনারের শর্তগুলো আলোচনা করা হলো। যথাঃ

  • চেকে উল্লেখিত তারিখ হতে ০৬ (ছয়) মাসের মধ্যে চেক ডিজঅনার করা।
  • ব্যাংক হিসাবে পরিমাণ মতো টাকা থাকলে আপনি চেক ডিজঅনার করাতে পারবেন না।
  • ব্যাংকিং সময়ের মধ্যে আপনাকে চেক ডিজঅনার করাতে হবে।

চেকের মামলা করার পূর্ব শর্ত

  • ব্যাংকে গিয়ে প্রদত্ত চেকটি ডিজঅনার করিয়ে আনা।
  • নিদ্দিষ্ট সময় অথাৎ চেক ইস্যু করার তারিখ হতে ৬ মাসের মধ্যে ডিজঅনার করা।
  • এরপর চেকের টাকা পরিশোধের জন্য ৩০ (ত্রিশ) দিন সময় দিয়ে উকিল নোটিশ বা লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া।
  • উকিল নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে, পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে মামলা দায়ের করতে হবে।

চেক মামলা থেকে বাচার উপায়

আমাদের মাঝে অনেকেই চেকের মামলার মাধ্যমে প্রতারিত হয়ে থাকেন। উক্ত চেক মামলা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলো, স্থানীয় ভাবে উক্ত বিষয়টির মীমাংসা করা। তবে এই কাজটি যদি সম্ভব না হয়, তাহলে আপনাকে ভিন্ন উপায় অনুসরন করতে হবে।

স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করা সম্ভব না হলে অবশ্যই একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ অ্যাডভোকেট এর শরনাপন্ন হতে হবে। আর তার মাধ্যমে আপনি এই ধরনের চেক মামলার প্রতারনার হাত থেকে রেহাই পেতে পারেন।

কিন্তু আপনি যদি নিজেই এই প্রতারনার সাথে যুক্ত থাকেন। তাহলে আপনি আইন অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধে অপরাধী হবেন।

এই চেকের মামলা থেকে বাচার উপায়ের মাধ্যম হলো দুটি আইন। যেগুলোর মাধ্যমে চেক মামলার প্রতারনা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। যেমন-

  1. হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইন ১৮৮১ এর ১৩৮ ধারা অনুযায়ী।
  2. মূল আইন – দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪০৬ এবং ৪২০ অনুযায়ী।

উপরোক্তোত দুটি আইন ও একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ অ্যাডভোকেট এর মাধ্যমেই আপনি সেই মামলা থেকে প্রতিকার পাবেন।

উপসংহারঃ

এতো সময় আমরা আলোচনা করলাম চেকের মামলা থেকে বাচার উপায়। তবে মামলায় জড়ানোর আগে অবশ্যই আমাদের চেষ্টা করতে হবে স্থানীয়ভাবে উক্ত বিষয়টির মীমাংসা করা।

তাছাড়া লেনদেন করার সময় অবশ্যই ব্যক্তির কথা চিন্তা করতে হবে, যাতে পরবর্তীতে এই ধরনের মামলায় জড়াতে না হয়।

About Author

AMINUL ISLAM

মোঃ আমিনুল ইসলাম। পেশায় একজন ব্যাংকার। চাকরির পাশাপাশি লেখা লেখির অভ্যাস থেকে ব্লগিং করা। এই ব্লগে বিভন্ন প্রযুক্তি , সরকারি সেবা, ব্যাংকিং, আইন ও নিয়ম কানুন, এবং ইসলামিক সংস্কৃতি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করেছি।

2 thoughts on “চেক মামলা থেকে বাচার উপায়”

Leave a Comment