BMET Smart Card। How to get Bmet Smart Card(Bangla)?

বাংলাদেশ থেকে বিদেশে বৈধ ভাবে কাজে যেতে চাইলে একজন মানুষকে অবশ্যই BMET স্মার্ট কার্ড নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু আমাদের মাথায় প্রশ্ন আসতে পারে বিএমইটি স্মার্ট কার্ড কি? কিভাবে  BMET Smart Card পাওয়া যাবে? এটার কাজ কি? তাই BMET স্মার্ট কার্ড সম্পর্কে আমাদের জানা একান্ত দরকার। চলুন জেনে নেই BMET Smart Card। 

বিদেশ যেতে আগ্রহী কর্মীদের জন্য প্রথম ও বাধ্যতামূলক ধাপ হচ্ছে সরকারি BMET ডাটাবেজে রেজিস্ট্রেশন। রেজিস্ট্রেশন সফল হওয়ার পর, ব্যবহারকারী একটি বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন কার্ড পাবেন। এতে রয়েছে একটি বিএমইটি আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (বিআইডিএন) এবং রেজিস্ট্রেশনকৃত ব্যক্তির প্রয়োজনীয় তথ্য।

বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন কার্ডটি আমি প্রবাসী অ্যাপ ব্যবহারকারীগণ তাদের ডিভাইসে সংরক্ষণ করতে পাবেন এবং আমি প্রবাসী ওয়েবসাইট থেকেও কার্ডটি ডাউনলোড করা যাবে। এজন্য রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত বৈধ পাসপোর্ট নম্বরটি প্রদান করতে হবে।

BMET Smart Card।

BMET বা বিএমইটি স্মার্ট কার্ড সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারনা নেই। তাই আমারা প্রথমে জেনে নেই BMET এর পূর্ণরূপ এবং এর অর্থ কি? এরপর জানবো BMET স্মার্ট কার্ড কি, কারা পাবেন এ কার্ড, কিভাবে পাবেন ও কারা এই কার্ড প্রদান করে থাকেন।

BMET কি?

BMET এর পূর্ণরূপ হলো-BUREAU OF MANPOWER EMPLOYMENT AND TRAINING যার বাংলা হলো জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো। এটি বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি প্রতিষ্ঠান। যে এ BMET কার্ড সার্ভিস দিয়ে থাকে।

বাংলাদেশ থেকে যদি কোনো কর্মী বা ব্যক্তি যদি বৈধভাবে বিদেশ যেতে চান তবে তাকে এই BMET বা জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে অনুমতি পত্র নিয়ে তারপরে যেতে হবে। আর এই অনুমতি সে পাবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে সার্টিফিকেট পেলে।

এ প্রতিষ্ঠান বিদেশগামী কর্মীদের বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ের উপর ট্রেনিং দিয়ে থাকে। এছাড়া কোন রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্সে দেওয়া, তাদের লাইসেন্স স্থগিত করা, বিদেশ গামী কর্মীদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট, তাদের প্রশিক্ষণ, সার্টিফিকেট প্রদান, বন্ধ করা, তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করাসহ বিদেশগামী কর্মী ও প্রবাশীদের নানা সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকে।

BMET এর লক্ষঃ

বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়ন ও অভিবাসী কর্মীদের অধিকতর কল্যাণ ও নিরাপদ অভিবাসন।

BMET এর কার্যাবলীঃ

  •  চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশী কর্মীদের বৈদেশিক কর্মসংস্থানে নিয়োগ সংক্রান্ত  কার্যক্রম প্রক্রিয়াকরণ।
  • বৈদেশিক কর্মসংস্থানে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের বহির্গমন ছাড়পত্র প্রদান সংক্রান্ত কার্যক্রম তত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রন।
  • বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মীদের বৈদেশিক কর্মসংস্থানে নিয়োগের জন্য  বেসরকারী নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান (রিক্রুটিং এজেন্সী) সমূহকে নিয়মিত তত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রন করা ।
  • আত্ম-কর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সহায়তা প্রদান।
  • কম্পিউটারাইজড ডাটাবেজের মাধ্যমে শ্রমবাজার সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও উপস্থাপন।।
  • বিদেশে বাংলাদেশী কর্মীদের সার্বিক কল্যাণ ও অধিকার সংরক্ষণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা।
  • কর্মপ্রত্যাশীদের তালিকা করণ ও সম্ভাব্য কর্মসংস্থানে নিয়োগে সহায়তা প্রদান।
  • বিভিন্ন কর্মোপযোগী ও পেশাভিত্তিক ট্রেডে প্রাতিষ্ঠানিক ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান।

BMET Smart Card কি?

বিএমইটি বা জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে বিদেশগামী কর্মীদের যে কার্ড বা অনুমতিপত্র দিয়ে থাকে তাকেই BMET Smart Card বলে।

কোন ব্যাক্তি বা কর্মী এই  কার্ড ব্যতিত বৈধভাবে বিদেশে যেতে পারবেন না। বিদেশ যেতে হলে প্রথমে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো হতে এই বিএমইটি কার্ড সংগ্রহ করতে হবে।

এই স্মার্ট কার্ডের মধ্যে ব্যাক্তির যাবতীয় তথ্য থাকে । বিদেশে যেতে ইমিগ্রেশন বা এয়ারপোর্ট ত্যাগ করতে এই কার্ড অবশ্যই প্রয়োজন হবে। কেননা আপনি যে বৈধভাবে বিদেশে যাচ্ছেন এবং বিদেশে যেতে আপনি পুরাপুরি প্রস্তুত বা ফিট তার প্রমান এই BMET Smart Card।

যখন একজন বিদেশগামী কর্মী বিদেশে যাওয়ার জন্য যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করবে তারপর সেসব কাগজপত্র নিয়ে BMET অফিসের অনলাইনে এই কার্ডের জন্য আবেদন করলে যাচাই-বাছাই করে একটি কার্ড প্রদান করবে।

এই কার্ডটি তৈরী করা হয় ব্যাক্তির যাবতীয় তথ্য দিয়ে। যেটি বেদেশে যাওয়ার সময় ইমিগ্রেশন চেক পোস্টে কার্ডটি পাঞ্চ করলেই যাবতীয় তথ্য চলে আসে। তাই বিদেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট, ভিসা, সহ অন্যান্য কাগজপত্র ঠিক করে BMET এর ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করে আবেদন করতে হয়।

অতপর BMET নূন্যতম তিনদিনের একটি ট্রেনিং এ অংশগ্রহন করে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে কার্ড পেতে হয়।

মোট কথা BMET Smart Card হলো BUREAU OF MANPOWER EMPLOYMENT AND TRAINING বা জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে প্রদত্ত বিদেশগামী ব্যাক্তিদের একটি সার্টিফিকেট । যাহা ব্যাক্তিকে বৈধভাবে বিদেশে যেতে সাহায্য করে।

আরো জানুনঃ

NID একাউন্ট রেজিস্ট্রেশনের নিয়ম।NID REGISTRATION

নতুন ভোটার হওয়ার নিয়ম

How to get Bmet Smart Card?

BUREAU OF MANPOWER EMPLOYMENT AND TRAINING বা জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে বিদেশগামী ব্যাক্তিদের নিবন্ধন ও Bmet Smart Card পেতে দুই ভাবে আবেদন করা যায়। যথা-

  1. অফ লাইনের মাধ্যমে।
  2. অনলাইনের মাধ্যমে।

পূর্বে বিদেশগামী ব্যাক্তিদের নিবন্ধন ও Bmet Smart Card পেতে BMET কার্যালয় গিয়ে অফিস থেকে প্রদান করা ফরম পূরন করে প্রয়জনীয় কাগজপত্র ও পাসপোর্ট এর কপি সংযুক্ত করে আবেদন করে BMET কার্ড সংগ্রহ করতে হতো।

কিন্তু বর্তমানে স্মার্ট বাংলাদেশে আর অফলাইনে আবেদন করতে হয়না। এখন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো এর নিজস্ব একটি App’s এর মাধ্যমে নিবন্ধন ও আবেদন করে ঘরে বসেই Bmet Smart Card পাওয়া যায়।

অফ লাইনের মাধ্যমে।

একসময় ইমিগ্রেশন সার্টিফিকেট পেতে বা BMET কার্ড পেতে অনেক সময় নষ্ট হতো। বিশেষ করে Skilled people এবং যারা নিজেরা নিজেদের work permit, visa জোগাড় করেছেন, তারা One-Stop Service এর মাধ্যমে এই কার্ড ৩-৪ ঘণ্টা বা ১ দিনের ভিতরে করিয়ে ফেলতে পারেন, কোন রকম দালাল না ধরেই। এর জন্য তাদেরকে চলে যেতে হবে ঢাকার কাকরাইলের BMET এর কার্যালয়ে।

BMET এর কার্যালয়ে যাওয়ার আগে মোট ১৫ টি ডকুমেন্ট BMET এর কাকরাইল অফিসের পিছনের বিল্ডিং এর ৩ তলায় নিয়ে যেতে হবে One-Stop Service ডেস্কে। নিচের ছবিতে উল্লেখিত সকল ডকুমেন্টের জোগাড় করে নিয়ে যেতে হবে।

BMET Smart Card

উপরের ফরমে উল্লেখিত মোট ১৫টি বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়ে যেতে হবে। এরপর অফিস থেকে প্রতদান করা ফরম যথাযথভাবে পূরন করে জমা দিতে হবে। আবেদন পত্রের নমূনা দেখা যাবে এই লিংকে। 

আবেদন পত্রের নমুনাঃ

BMET Smart Card

তবে অনেক সময় নিজে গেলে যারা একটু কম বুঝেন তারা কোন রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কণ্টাকে গেলে কোন হয়রানী ছাড়া করতে পারবেন। আর এজেন্সির মাধ্যমে work permit, visa জোগাড় করলে তারাই এই কার্ড করিয়ে দিয়ে থাকে।

অনলাইনের মাধ্যমে।

বর্তমানে স্মার্ট বাংলাদেশে আপনি ইচ্ছে করলে ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে BMET কার্ডের জন্য রেজিস্ট্রেশন করে অফিসে গিয়ে ফিঙ্গার ও ছবি তুলে BMET Smart Card পাওয়া যায়। নিম্মে অনলাইনের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে কিভাবে BMET Smart Card পাওয়া যায় তা জেনে নেই।

অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন।

BMET Smart Card পাওয়ার প্রথম ধাপ হচ্ছে নিবন্ধন করা। আপনি নিজে নিজেই ঘরে বসে এই নিবন্ধন করতে পারবেন। নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রেশন করতে আপনার যা যা প্রয়োজন-

  • একটি স্মার্ট মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার।
  • ইন্টারনেট কানেকশন।
  • আপনার পাসপোরট(মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে)।
  • পাসপোর্টটি আগে থেকেই স্পষ্টভাবে স্ক্যান করে একটি ফোল্ডারে সংরক্ষণ করতে হবে।

উপরের বিষয়গুলোর প্রিস্তুতি নিয়ে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো এর নিজস্ব একটি App’s ‘আমি প্রবাসী’ ডাউনলোড করে এর মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। মনে রাখতে হবে নিবন্ধন ছাড়া কোন ব্যাক্তি বিএমইটি স্মার্ট কার্ড পাবে না।

নিবন্ধন করার সময় নিম্মোক্ত ৭টি তথ্য সঠিক ভাবে পূরন করতে হবে ধাপে ধাপে।

  1. পাসপোর্ট তথ্য।
  2. ব্যাক্তিগত তথ্য।
  3. যোগাযোগের তথ্য।
  4. নমিনীর তথ্য।
  5. জরুরী যোগাযোগের তথ্য।
  6. শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য।
  7. ভাষাগত যোগ্যতার তথ্য।
  8. সবশেষে ৩০০/-(তিনশত) টাকা পেমেন্ট করার মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে।

টাকা পেমেন্টের মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন করার পর এই লিঙ্কে http://www.old.bmet.gov.bd/BMET/generalreports গিয়ে, passport নম্বর দিলে, আপনার সব তথ্য (ভুল ভাল তথ্য) ওখানে দেখাবে। সেটা প্রিন্ট দিয়ে সাথে রাখতে হবে ফিঙ্গার আর ছবি তুলার সময়।

সব কাজ হলে, ওরা আপনাকে একটা success page দিবে, সেটাই ১৩ নম্বর ধাপের success কপি। এই

ট্রেনিং বা প্রশিক্ষণ গ্রহন।

নিবন্ধন সম্পন্ন করার পর আপনাকে আপনার নিজ জেলেয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে কমপক্ষে তিন দিনের একটি প্রশিক্ষণ গ্রহন করতে হবে।  প্রশিক্ষণ গ্রহন শেষে কেন্দ্র থেকে একটি সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।

ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রদান।

নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ গ্রহন করার পর আপনাকে ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ছবি তুলতে হবে। এই কাজ আপনি আপনার নিজ জেলের DEMO অফিসে ও করতে পারেন অথবা BMET এর প্রধান কার্যালয় কাকরাইলেও করা যাবে।

উপরের ধাপগুলো সম্পন্ন করার পর BMET এর প্রধান কার্যালয়ের One Stop Service Center এ ১ দিনের মধ্যে BMET Smart Card পাওয়া যায়। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে সামান্য ঝামেলা হতে পারে। সেক্ষেত্রে কিছু টাকা খরচ করলে বিষয়টি সহজ হয়ে যবে।

এই কাজ যেমন আপনি নিজে নিজেই করতে পারবেন, তেমনি লাইসেন্স প্রাপ্ত কোন রিক্রটিং এজেন্সির মাধ্যমেও করতে পারবেন। রিক্রটিং এজেন্সির মাধ্যমে করলেই কোন ঝামেলা পোহাতে হবে না।

উল্লেখ্য যে যাদের ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট কোন রিক্রটিং এজেন্সির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়, তারাই সবকিছু করে দেয়। 

শেষ কথা।

বিদেশে যাওয়ার জন্য BMET Smart Card নেওয়া প্রধান কাজ। কেননা এটি ছাড়া কেউ ইমিগ্রেশন পার হতে পারবেনা। উপরের এই লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে আশা করি BMET Smart Card পেতে কষ্ট হবে না। সুতারাং আজ আমরা জানলাম BMET Smart Card। এবং How to get Bmet Smart Card?

About Author

AMINUL ISLAM

মোঃ আমিনুল ইসলাম। পেশায় একজন ব্যাংকার। চাকরির পাশাপাশি লেখা লেখির অভ্যাস থেকে ব্লগিং করা। এই ব্লগে বিভন্ন প্রযুক্তি , সরকারি সেবা, ব্যাংকিং, আইন ও নিয়ম কানুন, এবং ইসলামিক সংস্কৃতি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করেছি।

Leave a Comment