পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম ২০২৩

আপনি কি বাংলাদেশের পাসপোর্ট ধারী? আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ কি শেষ? চিন্তা করছেন কিভাবে পাসপোর্ট রিনিউ বা নবায়ন করবেন? তো আপনার জন্যই আজকের এই আর্টিকেলটি। চলুন জেনে নেই, পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম ২০২৩

প্রত্যেকটি পাসপোর্টের একটি নির্ধারিত মেয়াদ থাকে। সেটা হলো ৫ বছর অথবা ১০ বছর। মেয়াদ শেষ হলেই এটি রিনিউ বা নবায়ন করতে হয়। রিনিউ না করলে ঐ পাসপোর্টের কোন গ্রহনযোগ্যতা থাকে না।

তবে সকল পাসপোর্ট ধারীর উচিৎ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পাসপোর্ট রিনিউয়ের কাজ শেষ করা। তানা হলে হঠাৎ করে বিশেষ কোন প্রয়োজন পড়লে, তখন বিপদে পড়তে হয়। তাই যথাসময়েই পাসপোর্ট রিনিউ করে নিতে হয়।

বিশেষ করে যারা প্রবাশী তার বিপদে পড়েন বেশি। প্রবাশীদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৬ মাস আগেই এটি রিনিউ করে নিতে হয়। তাছাড়া অন্যান্যরা আগে পরে রিনিউ করে নিলেই হয়। তাদের জন্য নির্দিষ্ট সময় করা বাধ্যতামূলক নয়।

পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম ২০২৩

বাংলাদেশে এখন সব পাসপোর্ট অফিসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু রয়েছে। এখন যদি আপনি কোন পাসপোর্ট রিনিউ করতে চান,তবে রিনিউ করে ই-পাসপোর্ট নিতে হবে। কেননা বর্তমানে ই-পাসপোর্ট ছাড়া অন্য কোন পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছেনা। আর ই-পাসপোর্টের এই যুগে আপনাকে আবেদন করতে হবে অনলাইনে।

এখন আপনার মেয়াদ শেষ হওয়া পাসপোর্টের রিনিউয়ের আবেদন কিভাবে করবেন সেটাই চিন্তার বিষয়। চিন্তার কোন বিষয় নয়। নতুন ই-পাসপোর্টের আবেদন যেভাবে করতে হয় সেভাবেই আপনি ঘরে বসে অনলাইনে রিনিউয়ের আবেদন করতে পারবেন।

অনলাইনে আবেদন করার সময় অবশ্যই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী করতে হবে। ব্যক্তিগত সকল তথ্যই NID কার্ড বা নিবন্ধনের অনলাইন কপি অনুযায়ী হতে হবে। অর্থাৎ ই-পাসপোর্টে রিনিউ করার ক্ষেত্রেও জাতীয় পরিচয়পত্রে দেয়া তথ্যাদি অনুসরণ করতে হবে।

আরো জানুনঃ

পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম ২০২৩

পাসপোর্ট রিনিউর আবেদন করার সময় একটি নতুন ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে আবেদনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নতুন ই-পাসপোর্টের জন্য যেভাবে আবেদন করতে হয় সেভাবেই করতে হবে। তবে শুধু একটি অপশনে অর্থাৎ ID Documents অপশনে কিছু তথ্য দিতে হবে।

অনলাইনে নতুনভাবে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার সময় যে সব তথ্য সাধারনত দিতে হয় তা হলো-

  • Personal Information
  • Address
  • ID Documents
  • Spouse Information
  • Emergency contract
  • Passport option
  • Delivery Options & Appointment

উপরোক্ত তথ্যগুলোর মধ্যে শুধু ID Documents অপশনে আসার পর নিম্মোক্ত ধাপ গুল অনুস্মরণ করতে হবে।

পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম

প্রথম ধাপঃ

আবেদন করার সময়  ID Document অপশন আসলেই উপরের পেইজটি চলে আসবে। এখানে প্রথমেই আপনাকে জানতে চাওয়া হবে Do you have a previous passport?  এখানে আপনি Yes, I have a Machine Readable Passport (MRP) এই অপশনটি সিলেক্ট করুন।

দ্বিতীয় ধাপঃ

যখন আপনি Yes, I have a Machine Readable Passport (MRP) এই অপশনটি সিলেক্ট করলেন তখন আপনার কাছে জানতে চাওয়া হবে What is the reason for your passport request?

অর্থাৎ কেন আপনি নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেছেন, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে। সেক্ষেত্রে select reissue reson এ বেশ কিছু অপশন চলে আসবে। যেমন-

পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম

  • EXPIRED- যদি পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়
  • LOST/ STOLEN- যদি হারিয়ে যায় বা চুরি হয়ে যায়
  • DATA CHANGE- তথ্য পরিবর্তনের জন্য
  • UNUSABLE- পাসপোর্ট যদি ব্যবহার যোগ্যতা হারায় অথবা নষ্ট বা ছিড়ে গেলে।
  • OTHER- অন্যান্য কারণে

উপরের অপশন থেকে আপনাকে যে কোন একট সিলেক্ট করতে হবে।

তৃতীয় ধাপঃ

এই ধাপে আপনার পুরাতন পাসপোর্টের নাম্বার লিখতে হবে।

চতুর্থ ধাপঃ

চতুর্থ ধাপে আপনাকে পুরাতন পাসপোর্টের প্রদানের তারিখ ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ লিখতে হবে।

ID Document অপশন পূরণের ক্ষেত্রে উপরের ধাপগুলো অনুস্মরণ করার পর বাকী কাজ যথাযথভাবে নতুন আবেদনের মতো করতে হবে।

আপনার পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন করার পর, আবেদনের কপি এ-ফোর সাইজের কাগজের উভয় পৃষ্ঠায় প্রিন্ট করতে হবে। এরপর পাসপোর্ট রিনিউ ফি পরিশোধ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ফটোকপি সংযুক্ত করতে হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা দিতে হবে।

আরো জানতে ক্লিক করুনঃ

পাসপোর্ট রিনিউ করতে কি কি লাগে

  • জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি বা জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন কপি (বয়স ১৯ বা তার কম হলে)।
  • আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপি।
  • মানি অর্ডার বা ব্যাংক সার্টিফাইড চেক।
  • আগের পাসপোর্ট ও ডাটা পেজের প্রিন্ট কপি (মুল কপি দেখাতে হবে)।
  • সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে GO/NOC (যদি থাকে)।
  • তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (প্রযোজ্য হলে)।
  • হারানো পাসপোর্টের ক্ষেত্রে মূল জিডির কপি

পাসপোর্ট রিনিউ ফি

২০২৩ সালের দেয়া সরকারী তথ্য অনুসারে, পাসপোর্ট রিনিউয়ের ফি আর নতুন পাসপোর্টের ফি একই। এক্ষেত্রে ৫ বছরমেয়াদী ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট ফি ৪০২৫ টাকা। আর ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট ফি ৬৩২৫ টাকা। অন্যদিকে ১০ বছরমেয়াদী ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট ফি ৫৭৫০ টাকা ও ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট ফি ৮০৫০ টাকা।

শেষ কথা।

পাসপোর্ট এর মেয়াদ শেষ হলে বা হারিয়ে অথবা নষ্ট হলে অতি দ্রুত এটি রিনিউ বা নবায়ন করা উচিৎ। কেননা মেয়াদ শেষ হওয়ার ৬ মাস আগে রিনিউ নাকরলে অনেকেই ঝামেলায় পড়ে যায়। তাই সকল পাসপোর্ট ধারীর উচিৎ যথাসময় রিনিউ করে নেওয়া।

About Author

AMINUL ISLAM

মোঃ আমিনুল ইসলাম। পেশায় একজন ব্যাংকার। চাকরির পাশাপাশি লেখা লেখির অভ্যাস থেকে ব্লগিং করা। এই ব্লগে বিভন্ন প্রযুক্তি , সরকারি সেবা, ব্যাংকিং, আইন ও নিয়ম কানুন, এবং ইসলামিক সংস্কৃতি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করেছি।

Leave a Comment