আপনি কি ভোটার আইডি নিবন্ধন ফরমে নাম লিখিয়াছেন? অথচ ভোটার আইডি কার্ড বা NID CARD হাতে পাননি। কিন্তু আইডি কার্ড বা NID CARD আপনার জরুরী প্রয়োজন। আর আপনি জানেননা ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম। তো আপনার জন্য আজকের এই লেখাটি।
এই আর্টিকেলটি আপনি মনযোগ সহকরে সম্পূর্ণ পড়লে আপনি জানতে পারবেন, কি ভাবে অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড বা NID CARD ডাউনলোড করা যায়। তো চলুন জেনে নেই ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড। NID CARD DOWNLOAD-২০২৩ এর নিয়ম।
ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র কি?
জাতীয় পরিচয় পত্র বা NID card হলো একজন বেক্তির নাগরিকতার প্রমান। জাতীয় পরিচয় পত্র প্রত্যেক দেশের বৈধ বাসিন্দার একটি প্রমান পত্র। আর ব্যক্তির NID card যখন নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তখন সে ভোট দিতে পারে বা কার্ডটি ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র হিসেবে পরিচিতি পায়।
বর্তমান সময়ে যে কোন কাজের জন্য ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্র চেক করে থাকে। তাই একজন বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকের এই জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা আবশ্যক।
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে যা যা প্রয়োজন
ভোটার আইডি কার্ড বা NID CARD DOWNLOAD করতে আপনার নিম্মোক্ত ডকুমেন্ট একান্ত প্রয়োজন হবে। তাই ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে যে সকল প্রয়োজন তা নিচে উল্লেখ করা হলো
- NID Number/ফরম নাম্বার
- জন্মতারিখ (দিন, মাস, বছর)
- মবাইল নাম্বার (আবেদনের সময় যেটি ব্যাবহার করা হয়েছে)
- ঠিকানা
- আইডি কার্ডের মালিক
উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্টগূলো সাথে নিয়ে আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। যেহেতু ফেস ভেরিফিকেশন করার প্রয়োজন হবে তাই যার ভোটার আইডি কার্ড সে ব্যতীত একাউন্টে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে না।
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
ভোটার আইডি কার্ড অনলাইনে ডাউনলোড করার জন্য https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ লিংক এ প্রবেশ করে ফরম নম্বর বা NID Number, জন্ম তারিখ এবং সিকিউরিটি ক্যাপচা পুরন করে একটি একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আপনার একাউন্ট করার পর ড্যাশবোর্ড থেকে আপনার ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।
নিচে সম্পূর্ণ বিষয়টি কয়েকটি ধাপে দেখানো হলো। ভোটার আইডি কার্ডবা NID Card অনলাইন কপি অনলাইন থেকে ডাউনলোড করার জন্য যা যা প্রয়োজন তা উপরেরে আমরা আলোচনা করেছি। উপরের আলোচনা সম্পূর্ণ পড়ে নিচের ধাপগুলো অবলম্বন করেই আপনি সহজেই ভোটার আইডি কার্ডবা NID Card ডাউনলোড করতে পারবেন।
প্রথম ধাপঃ ওয়েব সাইটে প্রবেশ
ভোটার আইডি কার্ড বা NID card download বা জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার জন্য প্রথমে আমাদের বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর নির্ধারিত ওয়েবসাইট services.nidw.gov.bd এই ঠিকানায় প্রবেশ করতে হবে।
দ্বিতীয় ধাপঃ একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন
আমাদের যেহেতু এর আগে জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন ওয়েবসাইট অ্যাকাউন্ট করা ছিল না তাই আমাদের ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য টি অনলাইন থেকে ডাউনলোড করার জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তাই নিচের ফরমে রেজিস্টার করুন বাটনে ক্লিক করে অগ্রসর হতে হবে।
তৃতীয় ধাপঃ ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই
উপরের ফরমের রেজিস্ট্রেশন বাটনে ক্লিক করলেই নিচের ফরমটি আপনার সামনে আসবে।
এখানে ১ম শূন্যস্থানে ভোটার আইডি কার্ড নম্বর / ফর্ম নম্বর ভোটার অথবা ভোটার স্লিপ নাম্বার পূরণ করুন। ভোটার স্লিপে শুধু ৮ সংখ্যার নাম্বার থাকলে ফরম নাম্বারের আগে NIDFN যুক্ত করে ব্যাবহার করতে হবে। মনে করুন আপনার ভোটার আইডি কার্ড নম্বর ব ফরম নাম্বার 26587423,এখন আপনি এটি NIDFN26587423 এভাবে ভোটার আইডি নম্বর / ফর্ম নম্বর ঘরে প্রবেশ করাবেন
জন্ম তারিখের ঘরে জন্ম তারিখ বাছাই করতে হবে। ভোটার আবেদনের সময় জন্ম তারিখ যা দিয়েছিলেন তাই দিতে হবে। আপনার জন্ম তারিখ সিলেক্ট করার জন্য জন্ম দিন,জন্ম মাস এবং জন্ম সাল বাছাই করুন।
আপনার আইডি কার্ডের বা ফরমের তথ্য সঠিক ভাবে ইনপুট করা হলে, সবশেষে একটি সিকিউরিটি কেপচা পূরণ করে সাবমিট করতে হবে। সাবমিট করার পর নতুন একটি পেজ ওপেন হবে।
চতুর্থ ধাপঃ ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা যাচাই
আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই ফরমটি যথাযথভাবে পূরণ করে থাকেন তাহলে উপরের পেইজটি সাবমিট করার পর নিচের ফরমটি চলে আসবে।
এই পেইজে আপনাকে প্রথমে বিভাগ,জেলা এবং উপজেলা সিলেক্ট করতে হবে। আপনি রেজিস্ট্রেশন করার সময় বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা আলাদা দিয়ে থাকেন় তাহলে আপনাকে আলাদাভাবে তথ্য প্রদান করবেন আর যদি একই হয় তাহলে বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা স্থলে একই ঠিকানা প্রদান করবেন।
ঠিকানা যথাযথভাবে পূরণ করার পর ফরমের নিচে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করতে হবে।
পঞ্চম ধাপঃ মোবাইল নাম্বার যাচাই
উপরের ফরমের নিচে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করলে আপনাকে মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশনের জন্য নিয়ে যাওয়া হবে নিচের পেইজে।
অতঃপর আপনার ভোটার আইডি কার্ড নিবন্ধন করার সময় যে নাম্বার দিয়েছিলেন এখন এই নাম্বারটি ভেরিফিকেশন করতে হবে। Mobile Number verification করার জন্য আপনার ফোন নাম্বারের প্রথম এবং শেষ দিছু আংশ দেখতে পাবেন। নাম্বারটি আপনার কাছে থাকলে “বার্তা পাঠান” বাটন চাপুন।
প্রদর্শিত মোবাইল নাম্বর আপনার না হলে বা কোন নাম্বার প্রদর্শিত না হলে “মোবাইল পরিবর্তন” অপশন সিলেক্ট করুন। তার পর আপনার একটি সচল মোবাইল নাম্বার দিয়ে বার্তা পাঠানে চাপুন। তারপর nid server থেকে আপনার ফোনে একটি মেসেজ পাঠাবে, যাতে ৬ সংখ্যার একটি OTP Code থাকবে।
ষষ্ঠ ধাপঃ OTP Submit
একাউন্ট রেজিস্টেশনের এই ধাপে OTP এর মাধ্যমে ফোন নাম্বার যাচাই করতে হবে। এটি ভোটার আইডি কার্ড যাচাই করার করার একটি মাধ্যম, কারন ভোটার আইডি কার্ডের প্রকৃত মালিকের কাছেই এই নাম্বার থাকে। আপনার মোবাইল ফোনে অটিপি চলে আসলে যাচাইকরন কোডের ঘরে ইনপুট করুন।
৬০ সেকেন্ড অপেক্ষা করার পরেও যদি আপনার ফোনে কোন প্রকার ভেরিফিকেশন কোড না আসে তা হলে আরো একটি নতুন OTP Code এর জন্য “পুনরায় পাঠান” এই বাটনে ক্লিক করতে হবে। তার পরেও যদি কোন কোড না আসে তা হলে আপনার অন্য আরেকটি নাম্বার ব্যাবহার করে দেখতে পারেন। মাঝে মাঝে সার্ভারের সমস্যা কিংবা মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যার কারনে এমন হতে পারে।
যদি আপনার মোবাইলে ৬ সংখ্যার OTP চলে আসে। তাহলে ফরমের নিচে OTP Submit ঘরে আপনার ভেরিফিকেশন কোড দিয়ে “বহাল” অপশনে ক্লিক করুন। এর পরেই একটি গুরুত্বপূর্ণ পেইজে আপনাকে নিয়ে যাওয়া হবে। যেখানে যার ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করা হবে তার ফেস ভেরিফিকেশন করতে বলা হবে।
সপ্তম ধাপঃ Face Verification
জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে ফেইস ভেরিফিকেশন (Face Verification)। এই পর্যায়ে আইডি কার্ডের মালিক নিজে উপস্থিত থাকতে হয়। NID Wallet App ব্যাবহার করে ব্যক্তির ফেস ভেরিফিকেশন করা হয়।
Google Play Store থেকে Nid Wallet অ্যাপ আপনার মোবাইলে ইন্সটল করে নিতে হবে। অ্যাপ ইন্সটল হয়ে গেলে তা ওপেন করলে কেমেরা চালু করার পারমিশন চাইবে। সব কিছু ঠিক করে সফটওয়্যার চালু হলে, QR Code স্কেন করার জন্য কেমেরা চালু হবে। ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত QR Code মোবাইল দিয়ে nid wallet app দিয়ে স্কেন করে ফেস ভেরিফিকেশন করতে হবে।
Face Verification করার সময় ব্যক্তির চোখের পলক এবং মাথা ডানে-বামে নাড়াতে হয়। ব্যক্তিকে সনাক্ত হয়ে গেলে অনলাইন থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার জন্য আনুমোদন দেয়া হয়।
Face Verification সম্পন্ন হলে আপনার সামনে নিচের ফরমটি চলে আসবে।
উপরের ফরমের নিচে ডানদিকে সেট পাসওয়ার্ড বাটনে ক্লিক করে একটি পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে। ভবিষ্যতে ফেইস ভেরিফিকেশনের ঝামেলা ছাড়া NID একাউন্টে লগ ইন করতে হলে পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করুন। অতঃপর পাসওয়ার্ড সেট বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে চলে যান।
অষ্টম ধাপঃ ভোটার আইডি কার্ড বা NID Card Download
উপরের ধাপগুলো যথাযথভাবে করা হলেই আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ড বা NID Card ডাউনলোড করার জন্য অ্যাকাউন্টের ড্যাশবোর্ড প্রবেশ করতে পারবেন।
এখন হোম মেনুতে প্রবেশ করে আপনি এখন আপনার ছবি ও প্রোফাইল দেখতে পাবেন। তারপর এই পেজের নিচের দিকে ডাউনলোড নামক বাটনে ক্লিক করুন। তারপর আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারে ভোটার আইডি কার্ড এর PDF Download হয়ে যাবে।
শেষ কথা
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড হয়ে গেলে এটি প্রিন্ট করে লেমেনেটিং করে নিলে মুল ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্রে পরিনত হবে। এই অনলাইন হতে ডাউনলোড করা এনআইডি কার্ড এবং নির্বাচন কমিশন থেকে প্রদান করা NID Card এর মধ্যে কোন প্রকার পার্থক্য নেই।
Nice