জমি রেজিস্ট্রি খরচ ২০২৪: জেনে নিন জমি রেজিস্ট্রি করতে কত টাকা খরচ হয়

জমি ক্রয়ের জন্য দরদাম ঠিক করার পর পরই আমাদের মাথায় আসে জমির দলিল রেজিস্ট্রেশন খরচের বিষয়টি। কেননা বর্তমানে জমির রেজিস্ট্রেশন খরচের পরিমান অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই যারা জমির ক্রয়ের জন্য দরদাম ঠিক করে রেজিস্ট্রেশন খরচ নিয়ে চিন্তিত তাদের জন্য আজকের এই লেখাটি। চলুন জেনে নেই, জমি রেজিস্ট্রি খরচ ২০২৪

একটি জমির দলিল রেজিস্ট্রেশন করতে কত টাকা লাগে বা মোট কত টাকা খরচ হয় তা আমাদের জানা একান্ত জরূরী। কেননা আমরা যারা সাধারন মানুষ তাদের অনেকেরই জানা থাকেনা এই বিষয়টি। যার কারনে একেক দলিল লেখক বা আইনজিবীর কাছে থেকে একেক তথ্য পাওয়া যায়।

অনেকের জমি রেজিস্ট্রেশন খরচ জানা না থাকার কারনে পড়তে হয় দালালদের খপ্পরে। এতে আমাদের অনেকের অনেক টাকা নস্ট হয়ে যায়। আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে যে কোন ব্যক্তি নিজে নিজেই তার পছন্দের জমির রেজিস্ট্রেশন খরচ সহজেই বের করতে পারবে। তো চলুন পর্যায়ক্রমে জেনে নেই কিভাবে নিজে নিজেই হিসাব করে জানতে পারা যাবে জমি রেজিস্ট্রেশন করতে কত টাকা খরচ হয়।

আরো জানুনঃ

জমি রেজিস্ট্রি খরচ 2024

আজ আমরা জানবো জমির রেজিস্ট্রেশন ফি বা খরচ ২০২৪ ইং সন থেক কোন খাতে কত টাকা নির্ধারিত। বাংলাদেশে জমির রেজিস্ট্রেশন খরচ এলাকা ভেদে কমবেশি হয়ে থাকে। আর এই রেজিস্ট্রি খরচ বা ফি দুইভাবে আমরা হিসাব করতে পারি। যথা-

  1. সাধারন ভাবে হিসাব করে।
  2. ওয়েবসাইট বা মোবাইল এপসের মাধ্যমে।

সাধারন ভাবে হিসাব করে।

সাধারন ভাবে আমরা দলিল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য সরকারী যে সব খাতে টাকা জমা দিতে হয় সেগুলো হলো-

  1. স্ট্যাম্প শুল্ক।
  2. রেজিস্ট্রি ফিস।
  3. স্থানীয় সরকার কর।
  4. উৎসে কর বা উৎসে আয়কর(53H)।
  5. উৎসে আয়কর(FF53)।
  6. মূল্য সংযোজন কর।
  7. ই-ফি।
  8. এন ফি।
  9. এন.এন.ফি(নকল নবীশ গনের পারিশ্রমিক)।
  10. হলফনামা।
  11. কোর্ট ফি।

আমাদের দেশে সকল দলিলের ফিসের হার সমান নয়, দলিলের প্রকৃতি ও এলাকা অনুসারে তার ফিসের হার নির্ধারিত হয়ে থাকে। তাই উপরের ১১টি খাতে সাধারণত এলাকাভেদে কমবেশি ফি জমা দিতে হয়। নিম্মে খাতওয়ারী বিভিন্ন ফি আলোচনা করা হলো।

স্টাম্প শুল্ক ফি।

হস্তান্তরিত সম্পত্তির দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ১.৫% টাকা। এই টাকার দলিলে সর্বোচ্চ ১২০০ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্টাম্প ব্যবহার করা যাবে। স্টাম্প খাতের বাকি অর্থ পে-অর্ডারের মাধ্যমে স্থানীয় সোনালী ব্যাংক লিঃ এ কোড নং ১১৬২১০২ তে জমা করতে হবে।

রেজিস্ট্রি ফিস।

হস্তান্তরিত সম্পত্তির দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ১% টাকা। দলিলের মূল্য ২৪,০০০ টাকা বা তার কম হলে নগদ অর্থে স্থানীয় রেজিস্ট্রেশন অফিসে জমা দিতে হবে এবং ২৪,০০০ টাকার বেশি হলে পে-অর্ডারের মাধ্যমে স্থানীয় সোনালী ব্যাংক লিঃ এ, কোড নং ১৪২২২০১ তে জমা করতে হবে (পুরাতন কোড ১৮২৬)।

স্থানীয় সরকার কর।

দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ৩% টাকা। তবে যে কোন সিটি কর্পোরেশন এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড (উপজেলাধীন নয়) এর অধিনে সম্পত্তি হলে হস্তান্তরিত সম্পত্তির দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ১% টাকা। যাহা স্থানীয় সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হিসাব নম্বরে পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা করতে হবে।

উৎসে কর বা উৎসে আয়কর(53H)।

  • ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা [রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ব্যতীত], গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী এবং যে কোন সিটি কর্পোরেশন( ঢাকা দক্ষিন এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ব্যতীত) ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এর আওতায় দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ৬% টাকা উৎসে কর বা উৎসে আয়কর(53H) হিসেবে জমা দিতে হবে।
  • জেলা সদরে অবস্থিত পৌরসভা এলাকাকার আওতায় জমি হলে দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ৬% টাকা উৎসে কর জমা দতে হবে।
  • এছাড়া অন্য যে কোন পৌরসভা এলাকাকার আওতায় জমি হলে দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ৪% টাকা উৎসে কর দিতে হবে।
  • অন্যান্য এলাকার আওতায় ২% হারে কর দিতে হবে।

উৎসে আয়কর(FF53)।

(ক) Real Estate (রিয়েল এস্টেট) বা ল্যান্ড ডেভেলপার কোম্পানি কর্তৃক জমি বা প্লট বিক্রয় বা হস্তান্তরের ক্ষেত্রেঃ

  • ঢাকা, চট্টগ্রাম,গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী জেলা এর আওতায় দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ৫% টাকা উৎসে কর(FF53) হিসেবে জমা দিতে হবে।
  • দেশের অন্যান্য এলাকার আওতায় জমি বা প্লট বিক্রয় এর ক্ষেত্রে দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ৩% টাকা উৎসে কর(FF53) হিসেবে জমা দিতে হবে।

(খ) Real Estate (রিয়েল এস্টেট) বা ল্যান্ড ডেভেলপার কোম্পানি কর্তৃক প্লট বা ভবন এবং ফ্ল্যাট বা স্পেস বিক্রয় বা হস্তান্তরের ক্ষেত্রেঃ

  • ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে অবস্থিত গুলশান, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল এবং দিলকুশা বানিজ্যিক এলাকার আওতায়= আবাসিক ১৬০০/-টাকা প্রতি বর্গমিটার এবং বানিজ্যিক ৬৫০০/-টাকা প্রতি বর্গমিটার।
  • ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে অবস্থিত ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা ডি.ও.এইচ.এস, মহাখালী, লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি, উত্তরা মডেল টাউন, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ক্যান্টনমেন্ট ও কাওরান বাজারের আওতায় = আবাসিক ১৫০০/-টাকা প্রতি বর্গমিটার এবং বানিজ্যিক ৫০০০/-টাকা প্রতি বর্গমিটার।
  • চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে এলাকার পাচলাইশ আবাসিক এলাকা, খুলশি আবাসিক এলাকা, নাসিরাবাদ এবং আগ্রাবাদ এলাকার আওতায় = আবাসিক ১৫০০/-টাকা প্রতি বর্গমিটার এবং বানিজ্যিক ৫০০০/-টাকা প্রতি বর্গমিটার।
  • ঢাকা উত্তর ও দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন এলাকা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর উপরোক্ত এলাকা ছাড়া বাকী এলাকার আওয়াতায়= আবাসিক ১০০০/-টাকা প্রতি বর্গমিটার এবং বানিজ্যিক ৩৫০০/-টাকা প্রতি বর্গমিটার।
  • ঢাকা উত্তর ও দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন এলাকা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকা ছাড়া দেশের অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন এলাকার আওয়াতায়= আবাসিক ৭০০/-টাকা প্রতি বর্গমিটার এবং বানিজ্যিক ২৫০০/-টাকা প্রতি বর্গমিটার।
  • সিটি কর্পোরেশন এলাকা ব্যতীত দেশের অন্যান্য এলাকার আওতায় = আবাসিক ৩০০/-টাকা প্রতি বর্গমিটার এবং বানিজ্যিক ১২০০/-টাকা প্রতি বর্গমিটার।

উল্লেখ্য যে, আবাসিক ফ্লাটের আয়াতন ৬০ বর্গমিটার এর মধ্য হইলে ৪০% এবং ৬০ বর্গমিটার এর অধিক কিন্তু ৭০ বর্গমিটারের মধ্যে হইলে ২০% কম হবে।

(গ) দেশের অন্যান্য এলাকায় সাধারন(Real Estate (রিয়েল এস্টেট) বা ল্যান্ড ডেভেলপার কোম্পানি ব্যাতিত) জমি ক্রয় বা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে FF53 প্রযোজ্য নয়।

মূল্য সংযোজন কর(Vat)।

(ক) Real Estate (রিয়েল এস্টেট) বা ল্যান্ড ডেভেলপার কোম্পানি কর্তৃক জমি বা প্লট বিক্রয় বা হস্তান্তরের খেত্রেঃ

  • হস্তান্তরিত দলিলে উল্লেখিত মূল্যের উপর আদায়যোগ্য মূল্য সংযোজন কর বা Vat=২%।

(খ) Real Estate (রিয়েল এস্টেট) বা ল্যান্ড ডেভেলপার কোম্পানি কর্তৃক প্লট বা ভবন এবং ফ্ল্যাট বা স্পেস বিক্রয় বা হস্তান্তরের খেত্রেঃ

  • বিক্রয় বা হস্তান্তরিত ফ্লাটের আয়াতন ১ থেকে ১৬০০ বর্গফুট পর্যন্ত দলিল মূল্যের=২%।
  • ফ্লাটের আয়াতন ১৬০১ বর্গফুট এর বেশি হলে(যে কোন পরিমান) দলিল মূল্যের=৪.৫০%।
  • একই ফ্লাট দ্বিতীয়বার বিক্রয় বা হস্তান্তর অর্থাৎ পুনঃ রেজিস্ট্রেশনের সময় দলিল মূল্যের=২%

(গ) দেশের অন্যান্য এলাকায় সাধারন(Real Estate (রিয়েল এস্টেট) বা ল্যান্ড ডেভেলপার কোম্পানি ব্যাতিত) জমি ক্রয় বা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর বা Vat প্রযোজ্য নয়।

ই-ফি।

জমি রেজিস্ট্রেশনের সময় ই-ফি মোট ১০০/-টাকা পরিশোধ করতে হবে।

এন ফি।

এন.ফি হলো দলিলের প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ২৪/-টাকা।

এন.এন.ফি(নকল নবীশ গনের পারিশ্রমিক)।

এন.এন.ফি হলো দলিলের প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ৩৬/-টাকা।

হলফনামা

৩০০/-টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা প্রিন্ট করে দলিলের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।

কোর্ট ফি।

সম্পত্তি হস্তান্তর(এল.টি) নোটিশে আবেদনপত্রে ১০/-টাকা মূল্যের কোর্ট ফি সংযুক্ত করতে হবে।

রাজউক/সিডিএ/গৃহায়ন ও গণপূর্ত এর অধিনে জমির উৎসে আয়কর(53H) এর হার।

রাজউক/সিডিএ/গৃহায়ন ও গণপূর্ত এর অধিনে জমির উৎসে আয়কর(53H) এর হার তিনটি দফায় ভাগ করে নির্ধারণ করা হয়েছে। যথা-

  1. ১ম দফা-ক।
  2. ২য় দফা-খ।
  3. ৩য় দফা-গ।
১ম দফা-ক।

নিম্ম লিখিত বানিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত ভূমি অথবা ভূমি সহ বিল্ডিং(১ কাঠা=১.৬৫ শতাংশ) এর ক্ষেত্রে উৎসে করের হারঃ

  • ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের গুলশান, বনানী, মতিঝিল, দিলকুশা, নর্থ সাউথ রোড, মতিঝিল সম্প্রসারিত এলাকা এবং মহাখালী এলাকার আওতায়=দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ২০ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।
  • ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কাওরান বাজার এলাকার আওতায়=দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ১২ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।
  • চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আগ্রাবাদ ও সিডিএ এভিনিউ এলাকার আওতায়=দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ৮ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।
  • নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন  এবং ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, বাড্ডা সায়দাবাদ, গেন্ডারিয়া, পোস্তগোলা এলাকার আওতায়=দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ৮ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।
  • ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের উত্তরা, সোনারগাঁও জনপথ, বাংলামটর, শাহবাগ, পান্থপথ, এবং কাকরাইল এলাকার আওতায়=দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ১২ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।
  •  নবাবপুর, ফুলবাড়িয়া( ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের) এলাকার আওতায়=দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ৬ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।

তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে, উপরের স্থানের কোন জমিতে যদি বাড়ি বা ফ্লাট, এপার্টমেন্ট অথবা কোন ফ্লোর স্পেস থাকে, তাহলে তার হসাব হবে জমি প্রতি বর্গ মিটারে ৮০০/-টাকা এবং বাড়ি বা ফ্লাট, এপার্টমেন্ট অথবা কোন ফ্লোর স্পেস এর দলিল মূল্যের উপর ৮% এর মধ্যে যেটি বেশি সেটিই প্রযোজ্য হবে।

২য় দফা-খ।

নিম্ম লিখিত এলাকায় অবস্থিত ভূমি অথবা ভূমি সহ বিল্ডিং(১ কাঠা=১.৬৫ শতাংশ) এর ক্ষেত্রে উৎসে করের হারঃ

  • উত্তরা সেক্টর ১ থেকে ৯ পর্যন্ত, ১০০ ফুট রাস্তার পাশে খিলগাঁও পুনর্বাসন এলাকা, আজিমপুর, রাজারবাগ পুনর্বাসন এলাকা(বিশ্ব রোডের পাশে) =দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ৩ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।
  • চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ, পাচলাইশ, হালিশহর, নাসিরাবাদ, মেহেদীবাগ এলাকায় =দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ৩ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।
  • গুলশান, বনানী, বনানী ডিওএইচএস, ধাননমন্ডি, বারিধারা ডিওএইচএস, মহাখালী ডিওএইচএস, নিকেতন, বারিধারা, বসুন্ধারা আবাসিক এলাকা(ব্লক-ক থেকে পি পর্যন্ত)=দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ১০ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।
  • ঢাকার রাজউক পূর্বাচল আবাসিক এলাকা, ঝিলমিল আবাসিক এলাকা এবং বসুন্ধারা আবাসিক এলাকা(ব্লক-এ থেকে জেড পর্যন্ত) দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ৩ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।
  • মগবাজার, আরামবাগ, ফকিরাপুল, এলিফ্যান্ট রোড, গ্রীন রোড,ইস্কাটন রোড, বিজয় নগর, সেগুন বাগিচা, কাকরাইল (মূল রাস্তার ১০০ ফুটের মধ্যে) তেজগাঁও শিল্প এলাকা, শেরে বাংলা নগর প্রশাসনিক এলাকা, আগারগাও প্রশাসনিক এলাকা, লালমাটিয়া, ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ৫ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।
  • চট্টগ্রামের খুলশি এলাকায় দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ৩ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।
  • ঢাকার বিজয় নগর, সেগুন বাগিচা, কাকরাইল,মগবাজার, আরামবাগ, ফকিরাপুল, এলিফ্যান্ট রোড, গ্রীন রোড,ইস্কাটন রোড (মূল রাস্তার ১০০ ফুটের বাইরে) এলাকায় =দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ২.৫০ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।
  • ঢাকা সিটির গ্রীন রোড (ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার রোড নং ৩ থেকে ৮ পর্যন্ত=দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ৫ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।
  • ঢাকা জেলার উত্তরার সেক্টর ১০ থেকে ১৪ পর্যন্ত, নিকুঞ্জ উত্তর ও দক্ষিন, বাড্ডা পুনর্বাসন এলাকা, শ্যামপুর পুনর্বাসন এলাকা, গেন্ডারিয়া পুনর্বাসন এলাকা, আইজি বাগান পুনর্বাসন এলাকা এবং টঙ্গী শিল্প এলাকায়=দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ১.২০ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।
  • শ্যামপুর শিল্প এলাকা, পোস্তগোলা শিল্প এলাকা, জুরাইন শিল্প এলাকা=দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ১ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।
  • খিলগাঁও পুনর্বাসন এলাকা(১০০ ফুটের কম প্রসস্থ রাস্তার পাশে), রাজারবাগ পুনর্বাসন এলাকা(৪০ফুটের কম প্রসস্থ রাস্তার পাশে)=দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ১.৫০ লক্ষ টাকা, যেটি বেশি।
  • ঢাকার গোড়ান, হাজারীবাগ, ট্যানারী এলাকায়(৪০ ফুট রাস্তার পাশে)=দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% বা ৬০ হাজার টাকা, যেটি বেশি।

এখানেও উল্লেখ্য যে, উপরের এলাকার কোন জমিতে যদি বাড়ি বা ফ্লাট, এপার্টমেন্ট অথবা কোন ফ্লোর স্পেস থাকে, তাহলে তার হসাব হবে জমি প্রতি বর্গ মিটারে ৮০০/-টাকা এবং বাড়ি বা ফ্লাট, এপার্টমেন্ট অথবা কোন ফ্লোর স্পেস এর দলিল মূল্যের উপর ৮% এর মধ্যে যেটি বেশি সেটিই প্রযোজ্য হবে।

৩য় দফা-গ।

নিম্ম লিখিত এলাকায় অবস্থিত ভূমি অথবা ভূমি সহ বিল্ডিং(১ কাঠা=১.৬৫ শতাংশ) এর ক্ষেত্রে উৎসে করের হারঃ

উপরের দফা (ক) ও দফা (খ) এ উল্লেখ নেই এমন এলাকা যাহা  রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা (রাজউক) এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) আওতাধীন আছে, তাহা দলিলে লিখিত মূল্যের উপর ৮% হারে হবে।

আরো জানতে ক্লিক করুনঃ

ওয়েবসাইট বা মোবাইল এপসের মাধ্যমে।

জমি রেজিস্ট্রি খরচ ২০২৪ জানার আর একটি সহজ এবং চমৎকার মাধ্যম মোবাইল এপস। যার মাধ্যমে সহজে দলিলের রেজিস্ট্রি খরচ বা জমি রেজিস্ট্রি খরচ ২০২৪ বের করা যায়।

তাই এপসের মাধ্যমে খরচ জানার জন্য প্রথমে এই লিংকে ( https://fees.dolil.com/) প্রবেশ করতে হবে।  এই লিংকে প্রবেশ করার পর আপনাকে নিচের পেইজে নিয়ে যাওয়া হবে।দলিল রেজিঃ ফি ক্যাল্কুলেটর

উপরের পেইজের সব আপশনগুলো যথাযথ ভাবে পূরণ করে ফলাফল বাটনে ক্লিক করলেই আপনি পেয়ে যাবেন নিচের হিসাবের পাইজটি। সেখানে আপনি দেখতে পাবেন কোন ফি কত টাকা।ক্যাল্কুলেটর

এবাভে আমরা সহজেই নিজে নিজে বের করতে পারবো জমির দলিল রেজিস্ট্রি ফি বা খরচ কত।

রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধ পদ্ধতি।

জমি বা হস্তান্তরিত যে কোন সম্পত্তির দলিল রেজিস্ট্রেশন খরচের ফি  স্থানীয় সোনালী ব্যাংকের ট্রেজারী শাখায়  জমা দিতে হবে।

  • রেজিস্ট্রেশন ফি, ই-ফি, এন.ফি একসাথে একটি Pay-Order এর মাধ্যমে ব্যাংকের কোড নং-১-২১৬১-০০০০-১৮২৬ এ জমা করতে হবে।
  • ষ্ট্যাম্প শুল্ক ফি (দলিলে ব্যবহুত ষ্ট্যাম্প ছাড়া ) একটি Pay-Order এর মাধ্যমে ব্যাংকের কোড নং-১-১১০১-০০২০-১৩১১ এ জমা করতে হবে। উল্লেখ্য যে, দলিলে মোট ১২০০ টাকার ষ্ট্যাম্প লাগানো যাবে।
  • স্থানীয় সরকার কর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস সংলগ্ন NRBC ব্যাংকের বুথে জমা করতে হবে। আর যেখানে NRBC ব্যাংক বা ব্যাংকের বুথে নাই সেখানে স্থানীয় সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রারের ব্যাংক হিসাবে নগদে জমা করতে হবে।
  • উৎসে আয়কর(53H) একটি Pay-Order এর মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের কোড নং-১-১১৪১-০০০০-০১১১ এ জমা করতে হবে।
  • এন.এন.ফি নগদে সাব-রেজিস্টারের অফিসে জমা করতে হবে।

Real Estate (রিয়েল এস্টেট) বা ল্যান্ড ডেভেলপার কোম্পানি কর্তৃক প্রদেয় অতিরিক্ত ফি পরিশোধ পদ্ধতি।

  • উৎসে আয়কর(FF53) একটি Pay-Order এর মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের কোড নং-১-১১৪১-০০০০-০১০১ এ জমা করতে হবে।
  • ভ্যাট(Vat) একটি চালানের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের কোড নং-১-১১৩৩-০০০০-০৩১১ এ জমা করতে হবে।

আয়কর রিটার্ন দাখিল।

জমি রেজিস্ট্রেশন খরচ ২০২৪ এর সাথে আরো একটি বিষয় বর্তমানে যুক্ত হয়েছে। আর তা হলো আয়কর রিটার্ন জমা।

সিটি কর্পোরেশন এলাকা, পৌরসভা এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় ১০ লক্ষ টাকার অধিক জমি, বিল্ডিং বা এপার্টমেন্ট বিক্রি, লিজ, হস্তান্তর, বায়নানামা অথবা আমমোক্তার নামা দলিল নিবন্ধন করতে আবশ্যই সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তির আয়কর রিটার্ন দাখিল আপডেট থাকতে হবে।

শেষ কথা

এতো সময় আমরা জানতে পারলাম জমি রেজিস্ট্রি খরচ ২০২৪।  আসা করি এই লেখাটি আপনি শুরু থেকে শেষে পর্যন্ত পড়লে রেজিস্ট্রিশন ফি বা জমি রেজিস্ট্রি খরচ 2024 বের করতে আর আসুবিধা হবেনা।

About Author

AMINUL ISLAM

মোঃ আমিনুল ইসলাম। পেশায় একজন ব্যাংকার। চাকরির পাশাপাশি লেখা লেখির অভ্যাস থেকে ব্লগিং করা। এই ব্লগে বিভন্ন প্রযুক্তি , সরকারি সেবা, ব্যাংকিং, আইন ও নিয়ম কানুন, এবং ইসলামিক সংস্কৃতি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করেছি।

31 thoughts on “জমি রেজিস্ট্রি খরচ ২০২৪: জেনে নিন জমি রেজিস্ট্রি করতে কত টাকা খরচ হয়”

    • হলফনামা ফি আপনি বললেন ৩০০টাকা কিন্তু রংপুরে একজন দলিল লেখক বললেন ৪৩০০ টাকা। এরকম কি হতে পারে। জামাবেন প্লিজ।

      Reply
  1. জমি রেজিস্ট্রেশনের নতুন ফি (যা কমানো হয়েছ) সেটা কি শুরু হয়েছে?

    Reply
  2. ভাই কবে নাগাদ সংশোধিত মুল্য কর্যকরি হবে,জানা থাকলে প্লিজ জানাবেন

    Reply
  3. জমি রেজিস্ট্রেশনের নতুন ফি (যা কমানো হয়েছ) সেটা কবে থেকে কার্যকর হবর

    Reply
  4. ভাই আমি নয় লক্ষ টাকা দিয়ে পাচ শতাংশ জমি কিনেছি গ্রামে। প্রশ্ন হলো জমি রেজিস্ট্রার করতে কত টাকা খরচ হবে।

    Reply
    • আপনি আপনার দলিলের রেজিস্ট্রি খরচ বা ফি বের করতে পারেন অনলাইন ফিস ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে এই লিংকে ( https://fees.dolil.com/) প্রবেশ করে।

      Reply
  5. আমার একটা জমি রেজিস্ট্রেশন করতে চাই ২ বিঘা খরচ কমাতে চাইলে কি ভাবে করলে ভালো হয়। পরামর্শ আবশ্যক।

    Reply
    • আপনি যে মৌজায় জমি রেজিস্ট্রেশন করতে চান, সেই মৌজার জমি বিক্রির রেট আগে জেনে নিন। মৌজা রেট বা দর অনুযায়ী দলিলের রেট বা দর লেখালে খরচ কম হবে। মৌজা রেটের কম লেখানোর কোন সুযোগ নেই।

      Reply
    • ভাই আমি আমার বাড়ির পিছনে ১ কাঠা জমি নিয়েছি। ছয় লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা। আমার রেজিষ্ট্রি ফি কত আসবে প্লিজ একটু বলুন।এখানে আমার কাছে অনেক টাকা চাচ্ছে

      Reply
      • আপনি কোন মৌজায় ঐ জায়গাটি নিয়েছেন সেটা কিন্তু বলেননি। সুতারাং আমি মৌজা ও থানা-জেলার নাম ছাড়া বলতে পারছিনা। তাই আপনি মৌজা ও থানা এবং জেলার নাম নিয়ে আমার ঐ ব্লকের যে এপসের লিংক দেওয়া আছে সেটা ব্যবহার করে নিজে নিজেই বের করতে পারবেন।

        Reply
  6. আমি ঢাকার দোহারে একটা জমি কিনেছি ৩৪ শতাংশ । দাম ১৭ লাখ টাকা । এখনো রেজিষ্ট্রেশন করা হয়নি , এখন শুনেছি রেজিষ্ট্রেশন খরচ অনেক বেশি ? যদি আমাকে একটা আনুমানিক হিসাব দিতেন ,যে কত টাকা আসতে পারে আমার রেজিষ্ট্রেশন খরচ ? আমি অনেক উপক্রিত হতাম ।

    Reply
  7. পচায় দোকান লেখা দলিলে
    266 বর্গফুট উল্লেখ করা তার জন্য কি প্রতি বর্গফুটে 1000টাকা করে ফিস দিতে হবে তেমন 266*1000=266000টাকা অতিরিক্ত ফিস দিতে হবে।

    Reply
  8. প্লটিং জমির জন্য নাকি অতিরিক্ত ৪/৫% বেশি খরচ হয় সেটা কি আছে এখোনো?

    Reply
    • জনাব, এটা এখন আর নেই, নতুন ভাবে এলাকা ভিত্তিক কিছু কিছু জমির রেজিস্ট্রেশন বেশি আছে।

      Reply
  9. ভাইয়া আমার ১২,০০,০০০ টাকার জমির জন্য ৮০, ০০০ টাকা খরচ হবে, এর বাহিরে দলিল লেখককে কী আরও টাকা দিতে হবে?

    Reply
    • ভাই আসলে আপনি যেই দলিল লেখক দিয়ে দলিল রেজিস্ট্রেরী করাচ্ছেন, তার কাছে জানিতে চান যে এই ৮০,০০০/- টাকার বাহিরে তাকে আরো কোন টাকা দিতে হবেকিনা? মূলত দলিল লেখকগন সব মিলিয়েই হিসাব দিয়ে থাকে। এখন আপনার জমি কোন জেলার কোন মৌজায় তাতো আমি জানিনা, বিধায় আমি এখন বলতে পারছিনা যে আরো কোন খরচ আছেকিনা?

      Reply
    • উৎসে কর বা উৎসে আয়কর(53H)
      ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা [রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ব্যতীত], গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী এবং যে কোন সিটি কর্পোরেশন( ঢাকা দক্ষিন এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ব্যতীত) ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এর আওতায় দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ৬% টাকা উৎসে কর বা উৎসে আয়কর(53H) হিসেবে জমা দিতে হবে।
      জেলা সদরে অবস্থিত পৌরসভা এলাকাকার আওতায় জমি হলে দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ৬% টাকা উৎসে কর জমা দতে হবে।
      এছাড়া অন্য যে কোন পৌরসভা এলাকাকার আওতায় জমি হলে দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ৪% টাকা উৎসে কর দিতে হবে।
      অন্যান্য এলাকার আওতায় ২% হারে কর দিতে হবে।

      Reply

Leave a Comment