অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম।

পূর্বে জন্ম নিবন্ধন প্রক্রিয়ার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অফলাইনে হলেও বর্তমানে সরকারি ডাটাবেইজে নাগরিকদের তথ্য সংরক্ষণের স্বার্থে অনলাইনের মাধ্যমে তথ্যগুলো নেয়া হচ্ছে। এখন আর হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন ফরম পূরণ করে আবেদন করা যায়না। বর্তমানে অবশ্যই অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে। চলুন জেনে নিই, অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম।

পোষ্টের বিষয়বস্তু

জন্ম নিবন্ধন কি?

শিশুর জন্মের পর সরকারি ডাটাবেইজে/রেজিস্টারে নাম অর্ন্তভুক্ত করানোই জন্ম নিবন্ধন (Jonmo Nibondhon)। এটি নবজাতকের নাম ও একটি জাতীয়তা নিশ্চিত করার প্রথম আইনগত ধাপ।

জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনলাইন ডাটাবেইজে সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। অনলাইনে যে কেউ তার জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে জন্ম নিবন্ধন তথ্য যাচাই করতে পারবে।

জন্ম নিবন্ধনের প্রয়োজনীয়তা।

জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে শুরু করে পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ট্রেড লাইসেন্সসহ দেশের অভ্যন্তরে গুরুত্বপূর্ণ কার্যকলাপের জন্য একটি অপরিহার্য নথি জন্ম নিবন্ধন সনদ। জন্মসূত্রে একজন ব্যক্তির নাগরিকত্বের পরিচয় ধারণ করে এই জন্ম নিবন্ধন সনদপত্রটি। তাই শিশু জন্মের পর পরই অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজের পাশাপাশি বাবা-মায়ের উচিত সরকারি খাতায় শিশুর নামটি লিপিবদ্ধ করানো।

নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে।

শিশুর বয়সভেদে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভিন্ন হতে পারে। জন্ম নিবন্ধন করার নিম্মোক্ত কাগজপত্র প্রয়োজন হবে। তাই জন্ম নিবন্ধনের জন্য প্রথমেই এইসব কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে হবে।

শিশুদের জন্মের পর প্রথম ৪৫ দিনের মধ্যে যে কাগজপত্রগুলো প্রয়োজন।

  • শিশুর ইপিআই (এক্সপান্ডেড প্রোগ্রাম অন ইমিউনাইজেশন) টিকা কার্ড কিংবা ইপিআই কর্মীর নিকট থেকে   প্রত্যয়নপত্র
  • শিশুর জন্মস্থান ও জন্ম তারিখের প্রমাণপত্র হিসেবে হাসপাতাল বা ক্লিনিক থেকে শিশুর জন্ম সনদের সত্যায়িত অনুলিপি বা বার্থ এটেনডেন্ট-এর প্রত্যয়ন পত্র বা শিশুর জন্ম সংক্রান্ত অন্য কোনো প্রমাণ পত্র।
  •  বাংলা-ইংরেজি দুই ভাষাতেই বাবা-মার অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম সনদ।
  •  বাবা-মার জাতীয় পরিচয়পত্র।
  •  শিশুর যে কোন একজন অভিভাবকের কর পরিশোধের প্রমাণ।
  • আবেদনকারী পিতা-মাতা/ অভিভাবকের মোবাইল নম্বর।

শিশুর বয়স ৪৬ দিন থেকে ৫ বছর হলেঃ

  • ইপিআই (টিকা) কার্ড / স্বাস্থ্য কর্মীর প্রত্যায়নপত্র (স্বাক্ষর ও সীলসহ)।
  • পিতা ও মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন কপি (যদি থাকে)।
  • পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি (যদি থাক।
  • প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়নপত্র (স্বাক্ষর ও সীলসহ)।
  • বাসার হোল্ডিং নম্বর এবং হাল সনের হোল্ডিং ট্যাক্সের রশ।
  • আবেদনকারী পিতা-মাতা/ অভিভাবকের মোবাইল নম্বর।

৫ বছরের বেশি শিশু বা ব্যক্তির জন্যঃ

  • বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল স্বীকৃত এমবিবিএস বা তদূর্ধ্ব ডিগ্রিধারী চিকিৎসক-এর নিকট থেকে প্রত্যয়ন পত্র।
  • পিএসসি (প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী), জেএসসি (জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট) বা এসএসসি (মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট)।
  • বাংলা-ইংরেজি দুই ভাষাতেই বাবা-মায়ের অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম সনদ।
  • বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র।
  • জন্মস্থান বা স্থায়ী ঠিকানা প্রমাণের সাপেক্ষে বাবা/মা/দাদা/দাদির স্বনামে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে উল্লেখিত জায়গার বিপরীতে নবায়নকৃত কর প্রদানের প্রমাণপত্র

জন্ম নিবন্ধন করতে সকল বয়ষের মানুষের জন্য আবেদন সম্পন্ন করার পর এক কপি ছবি সহ অনলাইন প্রিন্ট কপি স্থানীয় সরকারের অফিসে জমা দিতে হবে।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করতে আরো প্রয়োজন হবে একটি কম্পিউটার এববগ সাথে থাকতে হবে ইন্টারনেট সংযোগ। আপনি নিজে অনলাইনের কাজ জানলে মাত্র ৫ থেকে ৭ মিনিটের মধ্যেই আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন।

জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম

বর্তমানে যেহেতু হাতে লিখে ফর্ম পূরণের মাধ্যমে আর জন্ম নিবন্ধনের আবেদন নেয়া হয় না সেহেতু অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করে অতঃপর সেই পূরণকৃত ফর্ম প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নিকটস্থ স্থানীয় সরকারের কার্যালয়ে জমা করতে হয়। আর এই আবেদন করতে নিম্মের কয়েকটি ধাপ অনুসরন করতে হবে।

প্রথম ধাপঃ ওয়েবসাইতটে প্রবেশ।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করতে প্রথমে আপনাকে প্রবেশ করতে হবে এই https://bdris.gov.bd/ ঠিকানায়। এখানে প্রবেশ করার পর আপনার সামনে নিচের পেইজটি ওপেন হবে।

নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন

দ্বিতীয় ধাপঃ নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির জন্মস্থানের ঠিকানা।

উপরের পেইজে আপনি চারটি অপশন দেখতে পাচ্ছেন। যথা-

  1. জন্মস্থান।
  2. স্থায়ী ঠিকানা।
  3. বর্তমান ঠিকানা।
  4. অন্য দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস।

অর্থাৎ আপনি কোন ঠিকানার মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন করাতে চান বা কোন স্থানের অফিস থেকে সনদ সংগ্রহ করতে চান এখানে তা টিক চিহ্ন দিতে হবে। এর পর নিচের ডানদিকের সবুজ চিহ্নিত “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করতে হবে।

তৃতীয় ধাপঃ নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির পরিচিতি।

উপরের পেইজের “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করলেই নিম্মের জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদনের পেইজটি পেয়ে যাবেন।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন

এই ফরমের দুটি অংশ ররেছে। যথা-

  1. নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির পরিচিতি।
  2. জন্মস্থানের ঠিকানা।

নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির পরিচিতিঃ

এখানে নাম বাংলা এবং ইংরেজীতে পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে নামের দুটি অংশ হলে প্রথম ঘরে প্রথম অংশ এবং দ্বিতীয় ঘরে নামের ২য় অংশ লিখতে হবে। ইংরেজীতে লিখতে ক্যাপিটাল লেটার ব্যবহার করতে হবে। এর পর জন্ম তারিখ, পিতা-মাতার কততম সন্তান এবং লিঙ্গ লিখতে হবে।

জন্মস্থানের ঠিকানাঃ

জন্মস্থানের ঠিকানা অংশে নিম্মের বিষয়গুলো পূরণ করতে হবে।

  • দেশের নাম।
  • বিভাগের নাম।
  • জেলার নাম।
  • উপজেলার ন।
  • ইউনিয়নের নাম।
  • ওয়ার্ড নাম্বার।
  • ডাক ঘর (বাংলা/ইংরেজীতে লিখতে হবে।)
  • ,গ্রাম/পাড়া/মহল্লা(বাংলা/ইংরেজীতে লিখতে হবে)।
  • বাসা ও সড়ক (বাংলা/ইংরেজীতে লিখতে হবে)।

সবশেষে ডান পাশে “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করতে হবে।

চতুর্থ ধাপঃ নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির বাব-মার পরিচিতি।

উপরের ফরমের নিচে “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করলেই আপনার সামনে নিচের ফরমটি চলে আসবে।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন

আবেদন পত্রের এই পেইজে দুটি অপশন রয়েছে। যথা-

  1. পিতার তথ্য।
  2. মাতার তথ্য।

পিতার তথ্যঃ

প্রথমে বাবার জন্ম নিবন্ধন নাম্বার, জন্ম তারিখ, নাম বাংলা এবং ইংরেজীতে লিখতে হবে। অতঃপর পিতার জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম্বার এবং বাবার জাতীয়তা লিখতে হবে।

মাতার তথ্যঃ

পিতার মতো মাতারও জন্ম নিবন্ধন নাম্বার, জন্ম তারিখ, নাম বাংলা এবং ইংরেজীতে লিখতে হবে। অতঃপর মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম্বার এবং জাতীয়তা লিখতে হবে।

এখানে নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির জন্ম যদি ২০০০ ইং সনের পূর্বে হয় তাহলে বাবা-মার জন্ম সনদ/জাতীয় পরিচয়পত্র না হলেও চলবে। কিন্তু যদি ২০০০ ইং সনের পর জন্ম হয় তাহলে বাব-মার জন্ম সনদ/জাতীয় পরিচয়পত্র অবশ্যই লাগবে। এভাবে বাব-মার কলামগুলো পূরণ করে নিচের ডান দিকে “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করতে হবে।

পঞ্চম ধাপঃ স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা নির্বাচন।

উপরের ফরমের নিচে “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করলেই আপনার সামনে নিচের ফরমটি চলে আসবে।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন

আবেদনের এই পেইজে দুটি অপশন রয়েছে। যথা-

স্থায়ী ঠিকানা।

বর্তমান ঠিকানা।

স্থায়ী ঠিকানাঃ

স্থায়ী ঠিকানার ক্ষেত্রে, জন্মস্থান ও স্থায়ী ঠিকানা একই হলে চেক বক্সে টিক দিন।

এরপর নিচের অপশনগুলো সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।

  • দেশের নাম।
  • বিভাগের নাম।
  • জেলার নাম।
  • উপজেলার ন।
  • ইউনিয়নের নাম।
  • ওয়ার্ড নাম্বার।
  • ডাক ঘর (বাংলা/ইংরেজীতে লিখতে হবে।)
  • ,গ্রাম/পাড়া/মহল্লা(বাংলা/ইংরেজীতে লিখতে হবে)।
  • বাসা ও সড়ক (বাংলা/ইংরেজীতে লিখতে হবে)।

বর্তমান ঠিকানাঃ

বর্তমান ঠিকানার ক্ষেত্রেও স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা একই হলে চেক বক্সে টিক দিন। এরপর দেশ, বিভাগ, ডাকঘর, পাড়া/গ্রাম/মহল্লা, বাসা ও সড়ক নাম্বার(বাংলা/ইংরেজীতে লিখতে হবে)।

চেক বক্সে টিক দিলেই আপনার ঠিকানা একটি পূরণ করলে অন্যটি অটোমেটিক ভাবে পূরণ হয়ে যাবে। আর যদি কোন ঠিকানা আপনি ব্যবহার না করেন তাহলে ঠিকানাগুলো নির্বাচন করে দিন। এরপর “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করুন।

ষষ্ট ধাপঃ আবেদনকারীর প্রত্যায়ন।

উপরের পেইজের নিচে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করলেই নিচের ফরম চলে আসবে।

জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম

এখানে যিনি এই জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করছেন, তার তথ্য দিতে হবে। সাধারণত পিতা-মাতার দায়িত্ব হচ্ছে শিশুর জন্ম নিবন্ধন করানো। এছাড়া  পিতামহ, পিতামহী, মাতামহ, মাতামহী বা আইনগত অভিভাবক সহ অন্য যে কেউ  শিশুর জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করতে পারেন। সেক্ষেত্রে তার তথ্য যথাযথ ভাবে পূরন করতে হবে।

তাছাড়া আপনি নিজেও নিজের জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারেন। নিজে আবেদন করলে নিজ সিলেক্ট করুন। নিজ সিলেক্ট করার সাথে সাথে আপনার নাম চলে আসবে। এরপর পরবর্তী বাটনে ক্লিক করার আগে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সংযোজন করতে হবে।

অথবা, পিতা, মাতা, পিতামহ, পিতামহী বা অন্য কেউ আবেদন করলে অন্যান্য সিলেক্ট করুন। অতঃপর তার ব্যক্তিগত তথ্য পূরন করে এবং সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সংযোজন করে নিচের ডান পাশের সবুজ বাটনে ক্লিক করে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন সম্পন্ন করুন।

সপ্তম ধাপঃ নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন পত্র প্রিন্ট।

সফলভাবে ফরমটি সাবমিট হলে আপনি জন্ম নিবন্ধন আবেদন পত্র প্রিন্ট করার অপশন পাবেন। জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন ফরম প্রিন্ট করে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ/ পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন অফিসে জমা দিতে হবে।

জন্ম নিবন্ধন আবেদন প্রিন্ট

জন্ম নিবন্ধন আবেদন প্রিন্ট করার সময়, Print Option থেকে More Settings এ ক্লিক করুন। এরপর Headers and Footers অপশনে টিক দেয়া না থাকলে টিক দিয়ে প্রিন্ট করুন। কেননা Headers and Footers এ ক্লিক না করলে আপনার প্রিন্ট কপিতে Application ID নাম্বার থাকবে না।

আর Application ID না থাকলে পরবর্তীতে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন এর অবস্থা জানার কোন মাধম পাবেন না। তাই প্রিন্ট করার আগে উপরের নিয়মটি অবশ্যই ফলো করুন।

অষ্টম ধাপঃ জন্ম নিবন্ধনের ফি প্রদান।

আবেদনকারীর তথ্য প্রদান করে সাবমিট করার পর আপনার সামনে চলে আসবে ফি পরিশোধের মাধ্যম। জন্ম নিবন্ধনের তথ্য সংশোধনের ফি দুইভাবে প্রদান করা যায়।যথা-

  1. ফি আদায়।
  2. চালানের মাধ্যমে।

ফি আদায়ঃ

ফি আদায় বলতে সরাসরি অফিসে যেটা জমা দেওয়া যায় সেটি। এই পদ্ধতিই সবচেয়ে উত্তম। অর্থাৎ কোন ঝামেলা ছাড়া জমা দেওয়া যায়। এই জন্য ফি আদায় অপশনে ক্লিক করতে হবে।

যেহেতু অনলাইনে আবেদন করার পর আবেদনের প্রিন্ট কপি সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ জমা দিতে যেতে হয় সেহেতু ঐ অফিসেই সরাসরি নির্ধারিত ফি জমা দিলেই হবে।

চালানের মাধ্যমেঃ

সরাসরি ফি জমা ছাড়াও অনলাইনের মাধ্যমেও জমা দিতে পারা যায়। সেইজন্য চালানের মাধ্যমে অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। চালানের মাধ্যমে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য পূরন করে ফি পরিশোধ করতে হবে।

নবম ধাপঃ আবেদনপত্র জমাদান।

উপরের সমস্ত কাজ শেষ করে আবেদনপত্রটি সাবমিট করে প্রিন্ট অপশন থেকে প্রিন্ট করতে হবে। প্রিন্ট করে যে সমস্ত কাগজপত্র আপলোড করা হয়েছে তার একটি করে কপি আবেদনের সাথে সংযুক্ত করে নির্ধারিত ফি এর রশিদ সহ ইউনিয়ন/পউরোসভা/সিটি কর্পোরেশনের/উপজেলার নির্ধারিত অফিসে জমা দিতে হবে।

আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময় অবশ্যই Application ID নাম্বার লিখে রাখতে হবে। তা নাহলে পরবর্তীতে আবেদনের অবস্থা জানা যাবে না। আবেদনের অবস্থা জানতে অবশ্যই Application ID প্রয়োজন হবে।

জন্ম নিবন্ধন করতে কত টাকা লাগে।

জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৭ এর বিধি ২৩ এর উপ-বিধি (৭) এর ক্ষমতাবলে সরকার জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ফিস নিম্নোক্তভাবে পুন:নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপরে আর ফি পুন:নির্ধারিত হয়নি।

  • জন্মের ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিন পর্যন্ত কোন ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন বিনা ফিসে করা যাবে।
  • জন্মের ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিন পর হইতে ৫ (পাঁচ) বৎসর পর্যন্ত কোন ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন ফি ( সর্ব সাকুল্যে) ২৫ টাকা দেশে নিবন্ধন করা যাবে।
  • জন্মের ৫ (পাঁচ) বৎসর পর কোন ব্যক্তি জন্ম নিবন্ধন ফি (সাকুল্যে) ৫০ টাকা দেশে নিবন্ধন করা যাবে।
  • বাংলা ও ইংরেজী উভয় ভাষায় নকল সরবরাহ পাওয়া যাবে ৫০ টাকা ফি জমা করে।
  • জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য আবেদন ফি ১০০  টাকা।
  • জন্ম তারিখ ব্যতিত নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, ঠিকানা ইত্যাদি অন্যান্য তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন ফি ৫০ টাকা বাংলাদেশে জন্ম হলে।
  • বাংলা ও ইংরেজী উভয় ভাষায় মূল সনদ বা তথ্য সংশোধনের পর সনদের কপি সরবরাহ পাওয়া যাবে বিনা ফিসে।

উপরোক্ত ফিগুলো রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে নির্ধারণ করা হয়েছে।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের আবেদনের অবস্থা জানার নিয়ম।

আবেদন করার পর আবেদনটি কোন অবস্থায় আছে তা জানা যাবে অনলাইনের মাধ্যমেই। এই জন্য প্রয়োজন হবে দুটি বিষয়ের। যথা-

  1. এপ্লিকেশন আইডি(যেটি আবেদন করার সময় দেওয়া হয়েছে)।
  2. সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জন্ম তারিখ।

জন্ম নিবন্ধনের আবেদনের অবস্থা জানার জন্য এই লিংকে – https://bdris.gov.bd/br/application/status ভিজিট করুন। এখানে প্রবেশ করার পর নিম্মের পেইজটি চলে আসবে।

  • এখানে প্রথমে আবেনের ধরন সিলেক্ট করুন।
  • অ্যাপ্লিকেশন আইডি বসিয়ে দিন।
  •  জন্ম তারিখ বসিয়ে পরবর্তীতে “দেখুন” বাটনে ক্লিক করুন।

“দেখুন” বাটনে ক্লিক করলেই আপনার আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা দেখতে পাবেন।

শেষ কথা।

জন্ম নিবন্ধন যেহেতু আমাদের দেশে একটি চলমান প্রক্রিয়া সেহেতু এটি করার নিয়ম জানা সকলেরি উচিৎ। আশাকরি উপরের লেখাটি সম্পূর্ণ পড়লে আপনি নিজে নিজেই আপনার বা আপনার পরিবারের যে কোন সদস্যের জন্ম নিবন্ধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

About Author

AMINUL ISLAM

মোঃ আমিনুল ইসলাম। পেশায় একজন ব্যাংকার। চাকরির পাশাপাশি লেখা লেখির অভ্যাস থেকে ব্লগিং করা। এই ব্লগে বিভন্ন প্রযুক্তি , সরকারি সেবা, ব্যাংকিং, আইন ও নিয়ম কানুন, এবং ইসলামিক সংস্কৃতি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করেছি।

Leave a Comment